কাজী অফিসের হাল অবস্তা এবং গ্লোবাল

প্রেক্ষিতে Digitalisation এর গুরুত্ব

 

 

কাজী অফিসে আমাদের দীর্ঘদিনের প্রত্যক্ষ কাজের অভিজ্ঞতার ফল হচ্ছে KODMA(Kazi Office Data Management). একদম সেকেলের অফিস ব্যবস্থাপনা এবং পেশাদারিত্বের বড় অভাব দেখে মনে হয়েছে এ-সেক্টরের আধুনিকতায়ন বা Digitalization অত্যাবশ্যক ।

সরকারের রুপকল্প ২০২১ প্রায় সম্পন্নের পথে । অথচ সরকারেরই একটি রেজিষ্ট্রেশন ( নিকাহ ও তলাক রেজিষ্ট্রেশন ) শাখা ডিজিটাল পরিকল্পনার বাইরে পরে আছে । পরিবর্তিত Global world বা Online বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে সরকার যখন পুরো দেশকে ডিজিটাল ফরমেটে সাজিয়ে তুলতে সচেষ্ট তখন এই সেক্টরটি ডিজিটাল সিস্টেমের বাইরে এবং সেকেলে অবস্থায় পড়ে থাকবে সরকার তা কিছুতেই চাইবে না ।

অবিন্যস্ত ও অনাধুনিক অফিস ব্যবস্থাপনার কারনে কাজী অফিসে সেবা নিতে আসা মানুষের অভিজ্ঞতা সুখকর নয় । নথি সংরক্ষনের আধুনিক পদ্ধতি অনুসরণ না করার কারণে বিয়ে-তালাক পরর্বতীতে ডকুমেন্ট সংগ্রহকালে লোকজনকে বেশ ভোগান্তি পোহাতে হয়। দেখা গেছে কাবিননামা সংগ্রহ করতে গেলে তল্লাশির নামে দু‘-তিন দিন সময় পার করে বলা হয় , আপনার কাবিননামা পাওয়া যায়নি । কারণ, পূর্বের কাজী মারাগেছেন বা এলাকা ভাগ হয়ে গিয়েছে অথবা অগ্নি দূর্ঘটনায় ভলিয়ূম পুড়ে গেছে ইত্যাদি । অথচ কাজী অফিসগুলোকে যদি Data Management এর আওতায় আনা হতো তাহলে কাজী অফিসের যাবতীয় তথ্য –ভান্ডারের স্থায়ী ও নিরাপদ হেফাজত নিশ্চত হতো এবং প্রয়োজনীয় তথ্যের জন্য Search Option এ –ক্লিক করলেই ডকুমেন্টটি বেড়িয়ে আসতো ।

বিয়ে-তালাকের সার্টিফিকেট বা ডকুমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দলিল । দেখা গেছে বিয়ের কাবিননামা না থাকার কারণে বা কাবিননামা সঠিকভাবে সংরক্ষণ না করার কারণে সুযোগ বুঝে স্বামী- স্ত্রী একে অপরকে অস্বীকার করে বসেছেন । তখন আদালতে গিয়েও সঠিক বিচার পেতে সমস্যা হয়। তাছাড়া সম্পত্তির অংশীদারিত্বের ওয়ারিস প্রমাণ, পাসর্পোট বা NID তে Sopouse হিসেবে স্বামী-স্ত্রীর নামের সংযুক্তি-বিযুক্তি, সাকসেশন সার্টিফিকেট ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ দলিলাদি কাবিননামার মাধ্যমে প্রমাণিত হয় । তাছাড়া ইমিগ্রেশন ও বিদেশে নাগরিকত্বের জন্য বা স্বামী-স্ত্রীর একত্রে হজ্ব ও বিদেশ ভ্রমনের জন্য বিদেশী এম্বাসী গুলো ম্যারেজ সার্টিফিকেটকে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন ।

প্রবাসী ব্যক্তিগণ স্বামী-স্ত্রীকে বিদেশে নেওয়ার জন্য বিদেশী এম্বাসীতে ম্যারেজ বা ডিভোর্সের পেপারস্ জমা দেন । এম্বাসী বা তার প্রতিনিধি এসব পেপারস্ এর সত্যতা যাচাইয়ের জন্য এসে কাজী অফিসের চরম অব্যবস্থাপনা ও অবিন্যস্ত অবস্থা দেখে বিরক্ত ও বিব্রতহন । ডিজিটাল জগতে এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত লজ্জাকর বিষয় । প্রতিদিন আমাদের আইন ও পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে গেলে দেখা যায় কী পরিমাণে ম্যারেজ ও ডিভোর্স সার্টিফিকেট সত্যায়নের জন্য জমা পড়েছে । অতএব, কাজী অফিসের সামাজিক , রাষ্ট্রীয় ও আর্ন্তজাতিক গুরুত্বের প্রেক্ষিতে এর Digitalization সময়ের দাবী মাত্র ।